স্টাফ রিপোর্টার, ময়মনসিংহ ॥ ঊনিশ বছর পর ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনকে ঘিরে উৎসবমুখর রাজনৈতিক অঙ্গন। সড়ক-মহাসড়কে চলছে তোরণের সামনে তোরণ নির্মাণ, ঠাঁই সংকটে দুরত্ব কমছে তোরণের। কেন্দ্রীয় ও জেলা নেতৃবৃন্দের আগমনকে স্বাগত জানিয়ে দেয়ালে দেয়ালে প্যানা-পোস্টারে শোভাবর্ধন বাড়িয়ে দিয়েছে। সভাপতি পদে প্রায় ২০জন ও সাধারণ সম্পাদক পদে ১২-১৩জন প্রার্থীর নাম শোনা যাচ্ছে। ১৪ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে এ উপজেলার সম্মেলন।
দীর্ঘ প্রার্থী তালিকা হলেও পৌরসভা ও ইউনিয়নের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকদের নিয়ে শক্ত অবস্থান তৈরি করেছেন উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি সোমনাথ সাহা। আওয়ামীলীগ বিরোধী দলে থাকাবস্থায় দলীয় কর্মসূচী পালন করতে গিয়ে ৩টি দ্রুত বিচার মামলার আসামী হন। এরমধ্যে ২১আগস্ট গ্রেনেড হামলার প্রতিবাদে মিছিল করায় পুলিশ বাদী হয়ে গাড়ী ভাংচুর ও দ্রুত বিচার মামলার আসামী করেন সোমনাথ সাহাকে। তিনি এবারের সম্মেলনে সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী। তার পক্ষে ইতোমধ্যে ১০টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার সভাপতি-সম্পাদকের মধ্যে অনেকেই প্রকাশ্যে প্রচার-প্রচারণায় নেমেছেন। এর মাঝে পৌর আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহ রফিকুল ইসলাম দিপু, ২নং গৌরীপুর ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক রুকনুজ্জামান পল্লব, ৩নং অচিন্তপুর ইউনিয়নের সভাপতি মো. আব্দুর রাজ্জাক, ৪নং মাওহা ইউনিয়নের সভাপতি সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ কালন, ৫নং সহনাটী ইউনিয়নের সভাপতি রুহিদাস আচার্য্য, ৭নং রামগোপালপুর ইউনিয়নের জহিরুল ইসলাম মাস্টার, ৮নং ডৌহাখলা ইউনিয়নের সভাপতি কাজিম উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান শহীদুল হক সরকার, ৯নং ভাংনামারী ইউনিয়নের সভাপতি সার্জেন্ট (অব.) নুরুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক জাকিত হাসনাত দুলন অন্যতম। আরেকটি সূত্র জানায়, এছাড়াও একাধিক সভাপতি ও সম্পাদকের সাথে সোমনাথ সাহার রয়েছে নিবিড় সম্পর্ক।
উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি সোমনাথ সাহা বলেন, দীর্ঘদিন পরে উপজেলা আওয়ামী লীগের কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। দলের নেতাকর্মীদের নিয়ে একসাথে পথচলার জন্য কাজ করছি। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাতে গড়া এ সংগঠনের কার্যক্রম জোরদার এবং সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে প্রত্যেক ওয়ার্ড-ইউনিয়নের নেতাকর্মীদের নিয়ে মতবিনিময় সভা করেছি। তিনি আরো বলেন, কেন্দ্রীয় ও জেলার নেতৃবৃন্দের সঙ্গেও নিয়মিত যোগাযোগ করে যাচ্ছি। সম্মেলনে আমি সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী। এরপরও নেত্রী যাকে যোগ্য মনে করবেন, আমরা তার নেতৃত্বেই দলকে সুসংগঠিত করবো।
সোমনাথ সাহা’র উদ্যোগে করোনাকালীন দুর্যোগে দরিদ্র মানুষজন ও মটরযান কর্মচারীদের মাঝে নিয়মিত খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করা হয়। এছাড়া উপজেলা বিভিন্ন প্রান্তে খাদ্য সংকটেপড়া মানুষের ঘরে ঘরে ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছে দিতে গড়ে তোলেন একটি স্বেচ্ছাসেবক টিম। জাতীয় শোক দিবসে প্রতিবন্ধীদের মাঝে হুইল চেয়ার বিতরণ, বঙ্গবন্ধু’র জন্মদিনে শত দরিদ্র শিক্ষার্থীদের মাঝে স্কুল ব্যাগ বিতরণের মত ব্যতিক্রমী কর্মসূচী পালন করা হয়। দলীয় নেতাকর্মীদের সুখে-দুঃখে পাশে থাকার জন্য ইউনিয়ন ও পৌরসভার সভাপতি-সম্পাদকসহ বিশাল নেতাকর্মীদের পছন্দের প্রার্থী এখন সোমনাথ সাহা।
তিনি উপজেলা ছাত্রলীগে সহসভাপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়াও তিনি ময়মনসিংহ জেলা ছাত্রলীগের সদস্য ও উপজেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক কমিটিতে সদস্য হিসাবে দলীয় কার্যক্রমে সক্রিয় অংশ গ্রহণ করেন। তার দাদা ভবেশ চন্দ্র সাহা ১৯৬৯সনে থানা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ পদে দায়িত্ব পালন করেন। সোমনাথ সাহার বাবা বিশিষ্ট ব্যবসায়ী সমীরণ চন্দ্র সাহা। তিনিও ব্যবসায়ী সংগঠনের সভাপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন।
দলীয় সূত্র জানায় ২০০৩ সনের ২৮ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হয় ত্রি-বার্ষিক কাউন্সিল। গঠিত কমিটিতে ছিলেন ৬৭জন। সম্মেলনে গঠিত কমিটির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, ৪জন সহসভাপতি, ১জন সাংগঠনিক সম্পাদক, সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য ৬জনসহ ইতোমধ্যে ২৬জন মারা গেছেন। শারীরিকভাবেও অসচ্ছল অনেকেই। বর্তমানে সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন সিনিয়র সহ সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ডাঃ হেলাল উদ্দিন আহাম্মেদ ও সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন যুগ্ম সম্পাদক ম. নূরুল ইসলাম।