ময়মনসিংহ সদরের দাপুনিয়া ইউনিয়নে মধ্য দাপুনিয়া জামি’আ আরাবিয়া ইদারাতুর রাসুল (সাঃ) ও বায়তুল হক জামে-মসজিদের তত্বাবধানে থাকা সরকারি পুকুর থেকে জাল ফেলে জোর পুুর্বক ৩ লক্ষাধিক টাকার মাছ মেরে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। সদর উপজেলা সহকারী কমিশনারের (ভূমি) নেতৃত্বে আনসার, উপজেলা নির্বাহী অফিসারের ড্রাইভার, এসিল্যান্ড অফিসের কর্মচারী ও দাপুনিয়া ইউনিয়ন ভুমি অফিসের কর্মকর্তারা মিলে গত ২৩ সেপ্টেম্বর সকালে প্রকাশ্য এ ঘটনা ঘটিয়েছে বলে অভিযোগ। সরকারী এ পুকুরে উক্ত মাছ মসজিদ ও মাদ্রাসা কমিটি ছেড়ে ছিলো। যা বিক্রী করে মাদ্রসার এতিম ছাত্র ও মসজিদ-মাদ্রাসার উন্নয়ন কাজে ব্যয় করা হতো।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ২০০৭ সন থেকে নানা কারণে এ সরকারী পুকুরটি পরিত্যক্ত অবস্থায় ছিল। পরবর্তীতে স্থানীয় লোকজন ও ব্যবসায়ীরা সম্মিলিত সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে পরিত্যক্ত সরকারী এ পুকুরটিতে মসজিদ ও মাদ্রাসার উন্নয়নে মাছ চাষ শুরু করেন। সেই থেকে মাদ্রাসা ও মসজিদ কর্তৃপক্ষ পুকুরটিতে মাছ চাষ করে প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন কাজ ও এতিমদের আহারের ব্যবস্থা করে ্আসছেন। স্থানীয় লোকজনের সন্তানেরা ও বিভিন্ন এলাকার ছাত্ররা এখানে ধর্মীয় ইসলামী শিক্ষা গ্রহন করে থাকে। অর্ধশত এতিম ছাত্র এখানে থেকে পুকুরের আয়ে কোনরকমে খেয়ে না খেয়ে ধর্মীয় শিক্ষা গ্রহন করে আসছে।
এলাকাবাসী আরো জানান, গত ২৩ সেপ্টেম্বর সকালে ময়মনসিংহ সদর উপজেলা সহাকারী কমিশনার (ভুমি) এইস এম ইবনে হাসানের নেতৃত্বে কতক আনসার সদস্য, সদও উপজেলার ইউএনও’র ড্রাইভার সোহাগ, পিয়ন নূরুল ইসলাম, সদর ভুমি অফিসের পিয়ন বিল্লাল হোসেন, ড্রাইভার কামরুল ইসলাম, দাপুনিয়া ইউনিয়ন ভুমি কর্মকর্তা অনুক বাবু ও পিয়ন মিলে জাল দিয়ে মসজিদ ও মাদ্রাসার তত্বাবধানে থাকা পুকুর থেকে প্রায় ৩ লক্ষাধিক টাকার মাছ ধরে গাড়িতে করে নিয়ে যায়। এলাকাবাসির মতে, মাছের মধ্যে ছিলো ৭/৮ কেজি ওজনের বেশ কিছু কাতল, মৃগেল ও রুই, এক দেড় কেজি ওজনের ৩০/৩৫ মন বাংলা মাছ এবং মলাসহ ছোট মাছ।
এ ব্যপারে সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) কর্মকর্তা এইচ এম ইবনে হাসানের সাথে রবিবার দুপুরে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, সরকারী এ পুকুরটি দীর্ঘদিন ধরে বেদখলে আছে। এতে কি পরিমান মাছ আছে তা দেখার জন্য জাল ফেলেছিলাম। তেমন কোন মাছ পাওয়া যায়নি। ৩ লাক্ষাধিক টাকার মাছ ধরা হয়েছে এমন প্রশ্ন করলে তিনি আরো বলেন, সামান্য কিছু মলা মাছ পাওয়া গেছে, যা আমরা নিয়ে এসেছি। মুলত খাস আদায়ের লক্ষেই পুকুরটিতে জাল ফেলা হয়েছে। লিজ দেয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। তারা মসজিদ মাদ্রাসার নামে দীর্ঘদিন পুকুরটিতে ধরে মাছ ধরে আসছে। তবে তারা যদি লিজ নিতে চায় এটারও বিধি বিধান আছে। ইউএনও মহোদয়ের সাথে কথা বলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।গত শনিবার ২৪ সেপ্টেম্বর এ ব্যাপারে খোজ খবর নিতে গেলে, মসজিদ কমিটির সভাপতি রফিকুল ইসলাম ও সাধারন সম্পাদক নূরুল ইসলামসহ ধর্মপ্রান মুসুল্লিরা জানান, পুকুরের আয় দিয়ে মসজিদ-মাদ্রাসার উন্নয়ন কাজ করা হতো এবং এতিম ছাত্রদের খাবারের ব্যবস্থা হতো। বিভিন্ন সময়ে ইউএনও’র ড্রাইভার সোহাগ, পিয়ন নূরুল ইসলাম, সদর ভুমি অফিসের পিয়ন বিল্লাল হোসেন, ড্রাইভার কামরুল ইসলাম মিলে বড়শি ও জাল দিয়ে মাছ ধরে নিয়ে যায়। বাধা দিলেই বলে এটি সরকারি পুকুর।