স্টাফ রিপোর্টার, ময়মনসিংহ। ময়মনসিংহের নান্দাইলে ব্যবসায়ীকে ছুরিকাঘাত করে ১৮ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেফতার করেছে ডিবি পুলিশ। বুধবার পৃথক এলাকা থেকে তাদেরকে গ্রেফতার করে পুলিশ। গ্রেফতারকৃতদের কাছ থেকে ছিনতাইকৃত ৬ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। তাদেরকে বৃহস্পতিবার আদালতে পাঠানো হলো ঘটনার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বিকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে।
ডিবির ওসি সফিকুল ইসলাম জানান, নান্দাইলের তারঘাট বাজার থেকে সিএনজি অটো রিক্সা যোগে কিশোরগঞ্জ যাওয়ার পথে কিশোরগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কের রসুলপুর দরগাঁবাড়ীর গেলে সিএনজি থামিয়ে জয় সাহাকে কুপিয়ে গুরুত্বর জখম করে ছিনতাইকারীরা ১৮ লাখ ৫ হাজার টাকা ভর্তি টাকার ব্যাগটি ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এ ব্যাপারে নান্দাইল মডেল থানার মামলা নং-০৭, তারিখ-০৯/১০/২০২২ খ্রিঃ, ধারা-৩৯৪ পেনাল কোড-১৮৬০ রুজু হয়।
পুলিশ সুপার মাছুম আহাম্মদ ভুঞা ঘটনাটিকে অতি গুরুত্ব দিয়ে মামলার রহস্য উদঘাটন, দ্রুততম সময়ের মধ্যে ছিনতাইকারীদের গ্রেফতার ও ছিনতাইকৃত টাকা উদ্ধারে জেলা গোয়েন্দা পুলিশকে (ডিবি) নির্দেশ দেয়। ডিবি পুলিশ টানা অভিযান পরিচালনা করে গত ১০ অক্টোবর মোঃ আব্দুল জলিল নামে একজনকে গ্রেফতার করে ৭ দিনের পুলিশ রিমান্ডের আবেদনসহ আদালতে প্রেরন করে। ইতোমধ্যে জেলা গোয়েন্দা চৌকস টিম ময়মনসিংহ, কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোনাসহ আশাপাশের এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে ১৯ অক্টোবর নেত্রকোনা জেলার দূর্গাপুর থানা এলাকা থেকে ছিনতাইকারী রবিউল আওয়াল ও মোঃ শাহীন মাহমুদকে গ্রেফতার করে।
এদিকে গত ১৯ অক্টোবর আসামি আব্দুল জলিলের রিমান্ড শুননী শেষে আদালত এক দিনের পুলিশ রিমান্ড মঞ্জুর করেন। আব্দুল জলিলকে পুলিশ হেফাজতে এনে গ্রেফতারকৃত আসামী রবিউল আওয়াল ও মোঃ শাহীন মাহমুদ দ্বয়ের উপস্থিতিতে ঘটনার বিষয়ে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা ১৮ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটিয়েছে বলে স্বীকার করে।
ওসি সফিকুল ইসলাম আরো বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা জানায়, জয় সাহার পিতা বিশ্বনাথ সাহা একজন পাইকারী মুদি ব্যবসায়ী। কিশোরগঞ্জ থেকে আশেপাশের বাজার ও বন্দর এলাকায় মুদি মালামাল বাকীতে পাইকারী বিক্রি করে থাকেন এবং বকেয়া টাকা সংগ্রহ করেন। জয় সাহা তার পিতার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের বকেয়া টাকা সংগ্রহের কাজটি করে থাকেন। প্রতি সপ্তাহে জয় সাহার বহন করা নগদ টাকার প্রতি আসামিরা লোভে পরে এ ঘটনা ঘটিয়েছে। তিনি আরো বলেন, ঘটনার ১৫/২০ দিন পূর্বে আব্দুল জলিল, শাহীন মাহমুদ ও পলাতক অপর এক আসামি ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা মোতাবেক আসামি আব্দুল জলিল ও শাহীন মাহমুদ গ্রেফতারকৃত আসামী রবিউল আওয়ালসহ অপর ১ পলাতক আসামিকে ছিনতাই করার জন্য ডেকে নিয়ে আসে। গ্রেফতারকৃত আসামি রবিউল আওয়াল সহ দুই ছিনতাইকারী পূর্ব পরিকল্পনামতে ৭ অক্টোবর যাত্রীবেশে সিএনজি অটো রিক্সায় জয় সাহার অপেক্ষায় বসে থাকে। জয় সাহা তারঘাট বাজার থেকে কিশোরগঞ্জ যাওয়ার প্রাক্কালে আসামি আব্দুল জলিল ও শাহীন মাহমুদ তাকে অনুসরণ করে। পরে রসুলপুর দরগাঁবাড়ী কাছে পৌঁছলে জয় সাহাকে কুপিয়ে গুরুত্বর জখম করে টাকা ভর্তি টাকার ব্যাগটি ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায়। গ্রেফতারকৃত রবিউল আওয়াল ও মোঃ শাহীন মাহমুদকে বৃহস্পতিবার আদালতে পাঠানো হলে ঘটনা বিস্তারিত বর্ণনাসহ নিজেদের কৃতকর্ম প্রকাশ করে স্বেচ্ছায় ফৌঃকাঃবিঃ ১৬৪ ধারা মোতাবেক স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে। এছাড়া আসামি আব্দুল জলিলের স্বীকারোক্তি মতে উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করে তার বসত ঘর হতে ছিনতাইকৃত টাকা উদ্ধার করে।