এম এ আজিজ। ময়মনসিংহের পুলিশ সুপার মাছুম আহাম্মদ ভুঞা জনগনের প্রতি দায়বদ্ধতা থেকে সাংবাদিকদের দেয়া কথা রক্ষা করতে চলছেন। পুলিশ সুপার মাছুম আহাম্মদ ভুঞা ময়মনসিংহে যোগদানের প্রথমদিনই সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় করেন। এ সময় ময়মনসিংহের সমস্যা, জনদুর্ভোগের কারণ ও করণীয় নিয়ে সাংবাদিকদের মাধ্যমে অবহিত হন এবং অঙ্গীকারাবদ্ধ হন, যে কোন মুল্যে নগরবাসীর প্রধান সমস্যা যানজট নিরসন করবেন। এছাড়া আইন শৃংখলা নিয়ন্ত্রণে কঠোর অবস্থানে থাকবেন। জনগনের প্রতি দায়বদ্ধতা থেকে সাংবাদিকদের সাথে দেয়া কথা রাখতে চেষ্টা করছেন দায়িত্বশীল পুলিশ সুপার মাছুম আহাম্মদ ভুঞা।
ইতিমধ্যেই ময়মনসিংহ নগরীর যানজট নিরসনকল্পে গত ১ নভেম্বর পুলিশ সুপারের কনফারেন্স রুমে মতবিনিময় করেন। ঐ মতবিনিময়ে প্রধান অতিথি ছিলেন, রেঞ্জ ডিআইজি দেবদাস ভট্টাচার্য্য, বিপিএম। মতবিনিময় সভায় যানজট নিরসনে দায়িত্বশীল সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
সিদ্ধান্ত সমুহ হলো, উত্তরবঙ্গের বাসসমূহ পাটগুদাম বাসস্ট্যান্ড হতে কেওয়াটখালী-দিঘারকান্দা-রহমতপুর বাইপাস রুটে চলাচল করবে। কোন মতেই নগরীর মধ্যদিয়ে এ সকল রোডের বাস চলাচল চলতে পারবে না। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে হবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বাস গুলো তারেক স্মৃতি অডিটোরিয়ামের পরিবর্তে সড়ক ও জনপথ অফিস সংলগ্ন সুবিধা জনক স্থান থেকে শিক্ষার্থীদের নিয়ে রহমতপুর বাইপাস হয়ে দিঘারকান্দা মোড় দিয়ে চলাচল করবে। তবে যে সকল বাস সকাল ৯ ঘটিকার পূর্বে ময়মনসিংহ নগরীতে প্রবেশ করবে শুধুমাত্র সে সকল বাস শহরের ভিতর দিয়ে প্রবেশ করে একই পথে সকাল ৯ ঘটিকার মধ্যে বাহির হয়ে যেতে পারবে। আগামী ৬ নভেম্বর থেকে এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে হবে।
ছুটির পর শিক্ষার্থীদের নিয়ে পলিটেকনিক্যাল মোড় পর্যন্ত এসে শিক্ষার্থীদের নামিয়ে একই রাস্তায় বাস ফেরত যেতে হবে।
টাউনহল মোড় থেকে তারেক স্মৃতি অডিটোরিয়াম পর্যন্ত রাস্তার পাশে কোন লেগুনা, বাস, সিএনজি থাকবে না। মুমিনুন্নেছা কলেজ গেইট হতে সিএনজি স্ট্যান্ড ১০০ গজ পশ্চিম দিকে থাকবে। এক সাথে ২০ টি সিএনজির বেশি দাঁড়াতে পারবে না। বাঁশ দিয়ে সিএনজি স্ট্যান্ডকে আলাদা করতে হবে।
পাটগুদাম এলাকায় লোকাল বাসগুলো বাসস্ট্যান্ড থেকে গেইট বন্ধ করে প্রধান সড়কে উঠে ব্রিজ পার হয়ে চলে যাবে। শুধুমাত্র ঢাকা হতে আগত বাসগুলো রাস্তার বাম পাশ ঘেষে দাঁড়িয়ে যাত্রী নামাবে এবং এজন্য সর্বোচ্চ ৫/৬ মিনিট দাঁড়াতে পারবে। এখানে ২ টি লেন থাকবে (০১টি সিএনজি ও অপরটি ঢাকা ফেরত বাস)। পাটগুদাম বাস স্ট্যান্ড গোলচত্ত্বর থেকে কালীবাড়ী রোডের দিকে যেতে প্রবেশ মুখে কোন অটো দাঁড়াবে না। পাটগুদাম থেকে চরপাড়া রোডে একটু এগিয়ে ইজিবাইকে যাত্রী উঠানোর জন্য আলাদা লেন তৈরী করতে হবে। শহরগামী সকল ইজি বাইক এই লেনে দাঁড়াবে। আগামী ৫ নভেম্বর থেকে এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে হবে। শম্ভুগঞ্জ বাজারে চলমান রাস্তার কাজের অংশ একপাশ বন্ধ করে অন্যপাশ খোলা রাখা। এ ব্যাপারে সড়ক ও জনপথ এর জনবল নিয়োগ করতে হবে। শম্ভুগঞ্জ মোড়ে বিদ্যুতের খুঁটি অপসারণ করতে হবে।
দিঘারকান্দা মোড়ের রাস্তার কাজ জরুরি ভিত্তিতে সম্পন্ন করতে হবে। বাস বে নির্মাণের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। ধোপাখোলা মোড়ের কুরিয়ার সার্ভিস অফিসগুলো প্রধান সড়কের পার্শ্ব থেকে সুবিধাজনক স্থানে স্থানান্তর করতে হবে। ত্রিশাল বাসস্ট্যান্ড (শালবন পরিবহন) অনতিবিলম্বে স্থানান্তর করতে হবে। চড়পাড়া মোড় হতে পলিটেকনিক্যাল মোড় পর্যন্ত অ্যাম্বুলেন্সগুলো এক লেনে রাখতে হবে। রাস্তার পাশে স্ল্যাব বসিয়ে অ্যাম্বুলেন্স রাখার ব্যবস্থা করতে হবে। সিটি কর্পোরেশন কর্তৃক থ্রি হুইলার (ইজিবাইক, অটো, মিশুক ইত্যাদি) রেজিষ্ট্রেশন কার্যক্রম নভেম্বরের মধ্যেই শেষ করা হবে। উক্ত কার্যক্রম শেষে অবৈধ থ্রি হুইলারের বিরুদ্ধে যৌথ অভিযান পরিচালিত হবে। আগমী ১ ডিসেম্বর হতে এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা হবে।
সকাল ৯টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত কোন ধরনের ট্রাক, পিকআপ শহরে চলাচল করতে পারবে না। তবে ২(দুই) টনের নিম্নে পিকআপ সকাল ১০ টা হতে ৪টা পর্যন্ত চলাচল করতে পারবে।
নতুন বাজার হতে গাঙ্গিনাপাড় পর্যন্ত এবং টাউনহল মোড় হতে র্যালীর মোড় পর্যন্ত কোন ধরনের পিকআপ দিনের বেলায় প্রবেশ করবে না। শনিবার পুলিশ সুপার মাছুম আহাম্মদ ভুঞা তার কনফারেন্স রুমে সাংবাদিকদের সাথে এক ব্রিফিংয়ের ফাঁকে নিজ দায়িত্বে এ সব কথা বলেন।