ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য (ভিসি), বিশিষ্ট রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ও বিএনপিপন্থি বুদ্ধিজীবী অধ্যাপক ড. এমাজউদ্দিন আহমদ স্ট্রোক জনিত কারণে মৃত্যুবরণ করেছেন(ইন্নালিল্লাহি….রাজিউন)। আজ শুক্রবার ভোরে রাজধানীর ল্যাবএইড হাসপাতালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৭ বছর।
বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, গতকাল রাত দু’টার দিকে স্ট্রোক করেন অধ্যাপক এমাজ উদ্দিন। পরে তাকে রাজধানীর ল্যাব এইড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবশেষে আজ ভোর ৬টার দিকে তিনি ইইকাল ছেড়ে পরকালে পাড়ি জমান।
এমাজউদ্দীন আহমদের মেয়ে ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. দিল রওশন জিন্নাত আরা নাজনীন জানান, আজ বাদ জুমা রাজধানীর কাঁটাবনে বাজমে কাদেরিয়া মসজিদে মরহুমের নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে স্ত্রীর কবরের পাশে তাকে সমাহিত করা হবে বলেও জানান তিনি।
অধ্যাপক এমাজউদ্দীন প্রায় আড়াই দশক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে অধ্যাপনা করেছেন। পাশাপাশি পালন করেছেন প্রতিটি প্রশাসনিক দায়িত্বও। ছিলেন বিভাগীয় প্রধান, মহসিন হলের প্রভোস্ট, প্রক্টর, প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর এবং সবশেষে ভাইস চ্যান্সেলর। ১৯৯২ খেকে ১৯৯৬, এই পাঁচ বছর ভাইস চ্যান্সেলর ছিলেন। এরপর ৬ বছরের কর্মবিরতি শেষে ২০০২ সালে যোগ দেন ইউনিভার্সিটি অব ডেভলপমেন্ট অলটারনেটিভের ভাইস চ্যান্সেলর পদে।
দীর্ঘ ৪০ বছর ধরে তুলনামূলক রাজনীতি, প্রশাসন-ব্যবস্থা, বাংলাদেশের রাজনীতি, বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি, দক্ষিণ এশিয়ার সামরিক বাহিনী সম্পর্কে গবেষণা করে চলেছেন। এসব ক্ষেত্রে সমগ্র দক্ষিণ এশিয়ায় তিনি বিশেষজ্ঞ হিসেবেও প্রখ্যাত। তার লিখিত গ্রন্থের সংখ্যা অর্ধশতাধিক। দেশ বিদেশের খ্যাতনামা জার্নালে তার প্রকাশিত গবেষণামূলক প্রবন্ধের সংখ্যা শতাধিক।
এমাজউদ্দীন আহমদ ১৯৩৩ সালের ১৫ ডিসেম্বর ভারতের মালদা জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। ৩১ আগস্ট ১৯৬৬ সাল থেকে ১ নভেম্বর ১৯৯২ পর্যন্ত তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
সৃষ্টিশীল গবেষণা ও আলেখ্য রচনার জন্য ‘মহাকাল কৃষ্টি চিন্তা সংঘ স্বর্ণপদক’, জাতীয় সাহিত্য সংসদ স্বর্ণপদক, জিয়া সাংস্কৃতিক স্বর্ণপদক অর্জন করেন।
শিক্ষাক্ষেত্রে অনবদ্য অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে বাংলাদেশ সরকার ১৯৯২ সালে একুশে পদকে তাকে ভূষিত করে।