পুলিশ সুপার বলেন, গত ২৫ ফেব্রুয়ারি ফুলবাড়িয়ার রঘুনাথপুরে স্কুলছাত্রীকে (১৪) দলবদ্ধভাবে ধর্ষণশেষে হত্যা করে লাশ গাছে ঝুলিয়ে পালিয়ে যায় ধর্ষকচক্র। খবর পেয়ে পুলিশ নিহতের লাশ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় নিহতের মা ফুলবাড়িয়া থানায় মামলা করেছেন। মামলা নং-৩২(২)২৩, ধারা-নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ (সংশোধনী/২০০৩) এর ৯(৩)।
এজাহারে বলা হয়েছে, দুর্বৃত্তরা কিশোরীকে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে ধর্ষণ ও হত্যা করে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে গাছে ঝুলিয়ে রেখে যায়। মামলাটিকে অধিক গুরুত্ব দিয়ে পুলিশ সুপার তাৎক্ষণিক ডিবি পুলিশকে দায়িত্ব প্রদান করেন। ডিবি পুলিশের এসআই আমিনুল ইসলামসহ একাধিক কর্মকর্তার নেতৃত্বে পৃথক টিম গঠন করে টানা অভিযান শুরু করে। অভিযানে গণধর্ষন ও হত্যাকান্ডের মুলহোতাসহ ৫ জনকে গ্রেফতার করে।
পুলিশ সুপার আরো বলেন, গ্রেফতারকৃত ধর্ষক মোঃ শাহজাহান, মাসুম বিল্লাহ এবং মোঃ শহিদ মিয়া ফুলবাড়িয়া রঘুনাথপুরসহ আশেপাশের এলাকায় স্কুল কলেজ পড়ুয়া ছাত্রীদের অনুসরণ করে অপহরণ, ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের অন্যান্য অপরাধ ঘটিয়ে থাকে।
পুলিশ সুপার আরো বলেন, গ্রেফতারকৃত আসামি শাহজাহান ও শহিদ অপহরণ ও গণধর্ষণের একাধিক ঘটনা ঘটিয়ে ইতোপূর্বে বহুবার কারাভোগ করেছে। তাদের বিরুদ্ধে অপহরণ, গণধর্ষণ এবং নগ্ন ভিডিও ধারণ ও প্রকাশের অভিযোগে একাধিক মামলা আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। মোঃ শাহজাহান, শহিদ ও মাসুম বিল্লাহ প্রকাশ্যে ইটভাটার শ্রমিক বলে পরিচিত হলেও রাতের আধারে তারা অপহরণ, ধর্ষণ ও হত্যার মতো ঘৃন্য জঘন্যতম অপরাধ ঘটিয়ে থাকে। গত ২৫ ফেব্রয়ারি সন্ধ্যায় ঐ কিশোরীর বাড়ির পার্শ্ববর্তী জায়গায় গিয়ে অন্ধকারে অপেক্ষায় থাকে। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টারদিকে কিশোরী প্রকৃতির ডাকে সারা দিতে
ঘর থেকে বের হলে গ্রেফতারকৃত ৫ ধর্ষণকারীসহ আরো ৩ জন তার মুখ চেপে ধরে জোরপূর্বক বাড়ীর পার্শ্ববর্তী এলাকায় নিয়ে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। পালাক্রমে ধর্ষণ শেষে ধর্ষণকারীরা পরিকল্পিতভাবে কিশোরীকে গলাটিপে শ্বাসরোধে হত্যা করে। পরে তার লাশ সামান্য দুরে এনে লাশের গলায় ওড়না পেঁচিয়ে গাছের ডালে লাশ ঝুলিয়ে রেখে পালিয়ে যায় চক্রটি। গ্রেফতারকৃত মোঃ রাসেল মিয়া ও মোঃ আলমগীর হোসেনকে আদালতে পাঠানো হলে ১৬৪ ধারা মোতাবেক স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে। আসামি মোঃ শাহজাহানের কাছ থেকে গণধর্ষণ ও হত্যার শিকার কিশোরীর ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি উদ্ধার হয়।
গ্রেফতারকৃত আসামিদের নিকট হতে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে গনধর্ষণ ও হত্যার সাথে জড়িত পলাতক আসামিদের গ্রেফতারের জন্য অভিযান অব্যাহত আছে।