সীমান্ত পেড়িয়ে চোরাচালান যে হরদম হচ্ছে তা অস্বীকার করার মত ঘটনা নয়। দেশের এক শ্রেণীর চোরাকারবারি প্রতিবেশী ভারতীয়দের সাথে আতাঁত করে প্রায় সময়ই দেশে কোটি কোটি টাকা মূল্যের মদ, হেরোইন, ফেন্সিডিল, গাজা, শাড়ি, থ্রিপিস, নানা ধরনের কসমেটিক্স দেশে আনছে। কিন্তু দুঃখের বিষয় দেশের সীমান্ত রক্ষী বিজিবি লাখ লাখ টাকার মালামাল আটক করলেও কেহ আটক হয়না! তাহলে কোন অদৃশ্য শক্তির ইশারায় ভারতীয় পণ্য দেশে এসে যায়?
সুত্রমতে, বিভিন্ন ধরনের ভারতীয় মালামাল বাসা-বাড়ি থেকে জব্দ করা হয়েছে অথচ দেখানো হয়েছে, পরিত্যক্ত অবস্তায় বিজিবি পেয়েছে। প্রশ্ন থেকে যায়, তাহলে দেশের মাটিতে কোন চোরাকারবারি নেই? নাকি মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে চোরাচালনদের ছেড়ে দেয়া হয়েছে? রাষ্ট্রীয় গোয়েন্দা সংস্থারা কি চোবাচালানীদের তালিকা করেনি? তারাইবা গ্রেফতার হচ্ছেনা কেন? এমন প্রশ্ন সীমান্তবর্তী মানুষের মাঝে।
সুত্র জানায় গত ৮ আগষ্ট দুপুরে ময়মনসিংহ ব্যাটালিয়ন (৩৯ বিজিবি) কতৃক গত জানুয়ারি- ২০১৮ হতে জুলাই ২০২২ পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে মালিকবিহীন/পরিত্যাক্ত অবস্থায় আটককৃত ভারতীয় বিভিন্ন প্রকার মদের বোতল ৪৬০৫ টি, ফেনসিডিল বোতল ১১২২ টি, ইয়াবা ট্যাবলেট ৩১৩০ পিস, ভারতীয় গাঁজা ১৭৬৫০ কেজি মাদক দ্রব্য সমূহ ধ্বংস করার লক্ষ্যে ৩৯ বিজিবি ময়মনসিংহ এর মাল্টিপারপাস সেড সংলগ্ন মাঠ মাদক দ্রব্য ধ্বংসকরণ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। দফায় দফায় বিভিন্ন সময়ে বিজিবি এসকল মালামাল আটক করার সময় দক্ষ বিজিবি কাউকে আটক করতে পারেনি!
উক্ত মাদক দ্রব্য ধ্বংসকরণ অনুষ্ঠানে নেতৃত্ব দেন- কর্নেল মাহমুদুর রহমান, পিএসসি, উপ- মহাপরিচালক সেক্টর কমাঃ, সেক্টর সদর দপ্তর ময়মনসিংহ।
এছাড়াও লেঃ কর্নেল তৌহিদ মাহমুদ, পিএসসি, পরিচালক অধিনায়ক ময়মনসিংহ ব্যাটালিয়ন (৩৯ বিজিবি), মেজর গাজি মোহাম্মদ সালাউদ্দিন অতিরিক্ত পরিচালক (অপারেশন) সেক্টর সদর দপ্তর, ময়মনসিংহ সেক্টর এবং ব্যাটালিয়নের সকল পদবীর অফিসার, মোঃ হাফিজুর রহমান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক), মোঃ খুরশিদ আলম উপ- পরিচালক মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ময়মনসিংহ, মোঃ হাসান হাওলাদার সহকারী সরকারি রাজস্ব কর্মকর্তা কাস্টমস,এক্সাইজ ও ভ্যাট বিভাগ সহ ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসনের অন্যান্য কর্মকর্তাগণ উক্ত মাদক দ্রব্য ধ্বংসকরণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
সুত্রমতে, ধ্বংসকৃত মাদক দ্রব্য সমূহের সিজার মূল্য আনুমানিক = ৮৩,৫৭০৫ টাকা হবে বলে জানা যায়।
অপরদিকে ০৪ আগস্ট ২০২২ তারিখ ১১০০ ঘটিকায় নেত্রকোণা ব্যাটালিয়ন (৩১ বিজিবি) এর অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল এ এস এম জাকারিয়া, পিএসসি এর সভাপতিত্বে নেত্রকোণা ব্যাটালিয়ন (৩১ বিজিবি) এর এমটি পার্কে “মাদক দ্রব্য ধ্বংসকরণ অনুষ্ঠান” এর আয়োজন করা হয়। উক্ত অনুষ্ঠানে এস এম মহসীন আলম, প্যানেল অব মেয়র-১, নেত্রকোণা পৌরসভা, এসএম মশিউর রহমান, সহকারী কমিশনার ও বিজ্ঞ এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট, নেত্রকোণা, মোরশেদা খাতুন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, সদর সার্কেল, নেত্রকোণা, সাবিকুন্নাহার, সহকারী পরিচালক, পরিবেশ অধিদপ্তর, নেত্রকোণা, মোঃ আলী হায়দার রাসেল, সহকারী পরিচালক, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর, নেত্রকোণা, মোঃ ফারুক আহমেদ, রাজস্ব কর্মকর্তা (চঃ দাঃ), কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট বিভাগ, নেত্রকোণাসহ বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
নেত্রকোণা ব্যাটালিয়ন (৩১ বিজিবি) কর্তৃক গত ০১ ডিসেম্বর ২০১৭ হতে ১১ মে ২০২২ তারিখ পর্যন্ত ১,৩৭,২৫,৩০০/- টাকা মূল্যমানের বিভিন্ন প্রকার মাদকদ্রব্য মালিকবিহীন/পরিত্যক্ত অবস্থায় আটক করেন। যা আনুষ্ঠানিকতার মাধ্যমে ধ্বংস করা হয়। ধ্বংসকৃত মাদকদ্রব্যের পরিসংখ্যান নিম্নরূপ ঃভারতীয় বিভিন্ন প্রকার মদ, ৮৯৭৪ বোতল,মূল্য-১ কোটি,৩৪ লাখ,৬১ হাজার টাকা। ভারতীয় বিয়ার ৬৬ বোতল মূল্য-১৬ হাজার ৫শ টাকা।ভারতীয় ফেন্সিডিল ২৫৭ বোতল, মূল্য -১ লাখ, ০২ হাজার,৮শ টাকা। ভারতীয় ইয়াবা ট্যাবলেট ৪০৩ পিস মূল্য-১লাখ, ২০ হাজার,৯শ টাকা। ভারতীয় গাঁজা ৪.৬ কেজি মূল্য ১৬ হাজার,১শ টাকা। ভারতীয় সেনেগ্রা/ভায়াগ্রা ট্যাবলেট ৮০ পিস মূল্য-৮হাজার টাকা।
পরিশেষে মাদকদ্রব্য পাচার রোধে বেসামরিক প্রশাসন ও অন্যান্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি মিডিয়াকর্মীসহ সকল স্তরের নাগরিকদের ঐকান্তিক সহযোগিতা কামনা করে মাদকদ্র্য ধ্বংসকরণ অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষিত হয়।