আসন্ন শারদীয় দুর্গাপূজা কে সামনে রেখে ময়মনসিংহ কোতোয়ালী মডেল থানা পুলিশের আয়োজনে, আজ শুক্রবার বিকেলে থানা কম্পাউন্ডে প্রস্তুতিমূলক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ জেলা, মহানগর ও উপজেলা শাখার নেতৃবৃন্দ, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের জেলা, মহানগর ও থানা এলাকার শাখার নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন পুজা মন্ডবের প্রতিনিধিবৃন্দ, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতিনিধিসহ ধর্মীয় নেতৃবৃন্দ স্বতস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেন।
সভায় সভাপতিত্ব ময়মনসিংহ কোতোয়ালি মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মো :শাহ কামাল আকন্দ পিপি এম (বার) । মহানহগর ও কোতোয়ালি থানায় এলাকায় ৮৩ টি পূজামন্ডপে দুর্গাপূজা আয়োজনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। ইতিমধ্যে প্রস্তুতিও শুরু হয়ে গেছে। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব আসন্ন দুর্গাপূজা প্রতিবছরের ন্যায় ময়মনসিংহে নির্বিঘ্নে ও সুষ্ঠুভাবে উদযাপনের লক্ষ্যে কোতোয়ালী প্রশাসন সবর্দা আন্তরিক ও দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ। মাঠপর্যায়ে সকলের সাথে সমন্বয় করে একটি শক্তিশালী সামাজিক সুরক্ষা বলয় তৈরির মধ্য দিয়ে উৎসবমুখরভাবে শারদ উৎসব উদযাপিত হবে মর্মে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন। এই বছর প্রতিটি মন্দিরে স্থায়ীভাবে পুলিশ ও আনসার সদস্য নিয়োজিত থাকবে তারপরেও মন্দিরের অবকাঠামোগত উন্নয়নের মাধ্যমে স্ব স্ব অবস্থান থেকে কোনরুপ প্রতিকূল পরিস্থিতি যেন তৈরি না হয় সে বিষয়ে সর্বদা সজাগ থাকতে হবে। সভায় পুলিশের কার্যক্রমের ভূয়সী প্রশংসা করা হয়। অনেকে ময়মনসিংহের পুলিশকে অমানবিক পুলিশ আখ্যায়িত করেন। তারা ওসি শাহ কামাল আকন্দের কার্যক্রম এর চিত্র ধরে তুলেন। স্বাধীনতার পর এমন জনবান্ধব পুলিশ তারা পায়নি বলে দাবী করেন। কমপক্ষে ত্রিশজন বক্তা বক্তব্য রাখেন।
সভায় অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এডভোকেট রাখাল চন্দ্র সরকার, ৮ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফারুক হাসান, এডভোকেট পীযুস কান্তি সরকার, এডভোকেট তপন দে, উত্তম চক্রবর্তী রকেট, শংকর সাহা, জয় কুমার দে, ইমন মহারাজ, এডভোকেট বিকাশ রায়, সঞ্জীব সরকার, সুজিত বর্মন, এডভোকেট প্রশান্ত দাস চন্দন, পবিত্র রঞ্জন রায় প্রমুখ।
ওসি শাহ কামাল আকন্দ বলেন, দুর্গাপূজা সুষ্ঠুভাবে উদযাপনের ক্ষেত্রে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে বিবেচিত হয়েছে এমন পুজোয় কমিটির লোকজন সচেতন থাকবেন এবং সমস্যা হলে দায়িত্বরত পুলিশদের সাথে সাথে জানানোর অনুরোধ করেন । বর্তমান সময়ে দুর্গাপূজা শুধু সনাতন ধর্মাবলম্বীদের উৎসব হিসেবে নয় এটি সারাদেশেই বাঙালির প্রাণের উৎসব হিসেবে উদযাপিত হয়। তাই ময়মনসিংহে এই উৎসবকে ঘিরে প্রতি বছরের ন্যায় কঠোর নিরাপত্তা বলয় থাকবে পুলিশের পক্ষ থেকে।
তিনি বলেন, সার্বিক নিরাপত্তার বিবেচনায় সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী এই বছর প্রতিটি মন্দিরকে বাধ্যতামূলক সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায় আনতে যা বাস্তবায়নে সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। এছাড়াও পূজামন্ডপে আনসার সদস্যের পাশাপাশি গত বছরের ন্যায় অবশ্যই মন্দির কমিটির পক্ষে সার্বক্ষণিক সেচ্ছাসেবী রাখতে হবে যা পুলিশের মাধ্যমে মনিটরিং করা হবে।
সভায় মন্দির কমিটির নেতৃবৃন্দদের উদ্দেশ্যে ওসি শাহ কামাল আকন্দ বলেন, অধিকাংশ মন্দিরেই নিরাপত্তা গেট কিংবা সীমানা প্রাচীর নেই পূজোর আগে তা নিরাপত্তার উদ্যোগী হতে হবে। এছাড়াও পূজা কে কেন্দ্র করে মাদকের বিস্তার এবং শহরে সৃষ্ট যানজট নিয়ন্ত্রণেও পুলিশ সুপরিকল্পিতভাবে কাজ করবে মর্মে সকলকে আশস্থ করেন তিনি।
সভায় বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তুলে ধরে পর্যায়ক্রমে সভায় আসন্ন দুর্গাপূজা কে সামনে রেখে সামাজিক সম্প্রীতি বজায় রেখে সকলে নিজ নিজ অবস্থান থেকে সুষ্ঠুভাবে সকল আয়োজন সম্পন্ন করতে প্রশাসন ও ধর্মীয় নেতৃবৃন্দ ঐক্যবদ্ধভাবে কাজের লক্ষ্যে সন্মিলিত সিদ্ধান্ত নেন।
সভা শেষে আমন্ত্রিত অতিথিদের আপ্যায়ন করা হয়।