পৃথক দুটি হত্যাকান্ডে ৩ জনকে গ্রেফতার করেছে কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশ। গ্রেফতারকৃতরা হলো, বাবুল, হৃদয় ও খোকন। এদের মাঝে হৃদয় হত্যাকান্ডের দায় স্বিকার করেছে। রবিবার কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশ প্রেস ব্রিফিংয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (কোতোয়ালি সার্কেল) শাহীনুল ইসলাম ফকির এ তথ্য জানান।
প্রাপ্ত তথ্য মতে, ২৩ সেপ্টেম্বর ভোরে নগরীর আকুয়া জুবলী কোয়ার্টার এলাকায় সাথী আক্তারকে (৩৮) তার ভাড়া বাসায় রক্তাক্ত অবস্থায় মৃত দেখতে পায় স্থানীয়রা। স্থানীয়রা থানায় খবর দিলে কোতোয়ালী থানা পুলিশ নিহতের লাশ উদ্ধার করে তদন্ত শুরু করে। এ ঘটনায় নিহতের বোন বাদি হয়ে কোতোয়ালি মডেল থানায় মামলা নং-১৩/১০০১, তারিখ-২৪/০৯/২০১২ ইং, ধারা
১৪৩/৪৪৮/৩০২/৩৪ দঃ বিঃ দায়ের করে।নগরীতে নিজ ঘরে নারী হত্যাকে অধিক গুরুত্ব দিয়ে পুলিশ সুপার মাছুম আহাম্মদ ভূঞা দ্রুততম সময়ে হত্যার রহস্য উদঘাটন ও ঘটনার সাথে জড়িতদের গ্রেফতারে কঠোর নির্দেশনা দেন। পুলিশ সুপারের নির্দেশনায় কোতোয়ালী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহীনুল ইসলাম ফকিরের তত্বাবধানে কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি শাহ কামাল আকন্দের নেতৃত্বে এসআই মোঃ আনোয়ার হোসেন-১, এসআই নিরুপম নাগ, এএসআই সুজন চন্দ্র সাহা সহ একটি টিম বিভিন্ন স্থানে টানা অভিযান শুরু করে। এক পর্যায়ে হত্যাকান্ডের ২৪ ঘন্টার মধ্যেই সদরের চুরখাই ও কেওয়াটখালী এলাকা থেকে শনিবার রাতে হত্যাকান্ডে জড়িত বাবুল ও হৃদয়কে গ্রেফতার করে। পরে তাকে নিয়ে পুলিশ হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত আলামত উদ্ধারে যায় এবং তার দেখানো ও নিজ হাতে বের করে দেয়া হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত একটি রক্তমাখা স্টীলের ছোরা উদ্ধার করে। গ্রেফতারকৃত হৃদয় পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকান্ডের ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে।
অপরদিকে নগরীর বলাশপুর হাক্কানী মোড়ে ২৪ সেপ্টেম্বর শনিবার সন্ধায় মোটরসাইকেল ও সিএনজির সাথে ধাক্কা লাগার ঘটনাকে কেন্দ্র করে কথাকাটাকাটির জের ধরে সিএনজি ড্রাইভার তাপস চন্দ্র সরকারকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়। এ হত্যার ঘটনায় খোকন নামে একজনকে গ্রেফতার করে। পরে তার তথ্য মতে, হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত আলামত (ছোরা) উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। ব্রিফিংয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আরো বলেন, ডিভোর্সী নারী সাথী আক্তার তার এক সন্তান নিয়ে আকুয়া জুবিলি কোয়ার্টার এলাকায় ভাড়ায় বসবাস করতেন। স্থানীয় আকুয়া মড়লপাড়ার হৃদয় নামক এক ব্যক্তি ঐ নারীকে উত্যক্ত করে আসছিল। এ ঘটনায় শালিশ পর্যন্ত হয়েছে।
প্রাথমিকভাবে ধারণা করা যাচ্ছে শালিশের কারণে হৃদয় ক্ষিপ্ত হয়ে ঐ নারীকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে। হত্যাকান্ডের প্রকৃত কারণ এবং জড়িত অন্যান্যদের নাম ঠিকানাসহ ত্দন্ত আরো অনেক তথ্য প্রকাশ পাবে। এছাড়া সিএনজি চালক তাপস হত্যায় জড়িত অন্যান্যদের গ্রেফতারে চেষ্টা চলছে। ব্রিফিংকালে ওসি শাহ কামাল আকন্দ, পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) ফারুক হোসেন, পুলিশ পরিদর্শক (ইন্টেলিজেন্স) ওয়াজেদ আলী উপস্থিত ছিলেন। এদিকে দুটি হত্যাকান্ডের ঘটনায় হত্যাকান্ডর ২৪ ঘন্টার মধ্যে রহস্য উদঘাটন ও জড়িতদের গ্রেফতার করায় পুলিশের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছে নগরবাসী।