ময়মনসিংহের সীমান্তবর্তী ধোবাউড়া উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রাম অঞ্চল কলসিন্দুর। এলাকা বাসীর পক্ষ থেকে গণ সংবর্ধনা ও ফুলেল শুভেচ্ছা জানায়। ভারতের মেঘালয়ঘেঁষা এই গ্রাম থেকে উঠে এসেছে একদল কিশোরী নারী ফুটবলার। তাদের এই সাফল্যেই কলসিন্দুর গ্রামের পরিচিতি পায় বিশ্বময়। দেশের ফুটবলে হিমালয় জয় করে গতকাল ৩০সেপ্টেম্বর শুক্রবার সন্ধ্যার পর নিজ গ্রামের বাড়িতে ফিরেছেন কলসিন্দুরের ৮ নারী ফুটবলার কন্যারা। নিজ উপজেলা ধোবাউড়া উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা পরিষদের পক্ষ থেকে গণ সংবর্ধনা ও প্রত্যেককে ৫০হাজার করে টাকা ফুলের শুভেচ্ছা জানানো হয়।
পথে পথে ফুলেল শুভেচ্ছা আর ভক্তদের ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে শুক্রবার রাতে বাড়িতে ফিরেছে সানজিদা মারিয়ারা। বাড়িতে তাদের পরিবারের ভালোবাসায় উচ্ছ্বসিত এই মেয়েরা। আশপাশের বাড়ি থেকে অনেক মানুষ এসেছেন তাদের দেখতে।
বাড়িতে ফেরার পর ফুটবলারদের বাড়িতেও ছিল শুভেচ্ছার আয়োজন। মারিয়ার বাড়িতে বেশ বড় করেই ফুলেল শুভেচ্ছা দিয়ে বরণ করেছে মারিয়া মান্দাকে। প্রত্যেকের বাড়িতেই ছিল আয়োজন।
দেশের সুনাম অর্জনকারী মেয়েদের কাছে পেয়ে আবেগে আপ্লুত তাদের অভিভাবক। মেয়েদের পছন্দের খাবার তৈরি করেছেন তাদের মায়েরা। সানজিদার মা হাসের মাংস রান্না করেছেন।
সানজিদা জানান, অনেকদিন পর মায়ের হাতের রান্না করা হাঁসের মাংস খেয়েছি।
মারিয়া মান্দা জানান, পথে পথে মানুষের ভালোবাসা পেয়েছি এজন্য বাড়িতে ফিরতে অনেক রাত হয়েছে।
শামসুন্নাহার সিনিয়র জুনিয়র, তহুরা মার্জিয়া, সাজেদা সবাই জানান পরিবারের সঙ্গে অন্যরকম ভালোলাগার কথা।
কলসিন্দুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে বঙ্গমাতা টুর্নামেন্ট দিয়ে খেলা শুরু করে এই মেয়েরা। শুরুর দিকে ছিল সমাজের অনেক বাধা বিপত্তি। মেয়েরা কেন ফুটবল খেলবে এসব নিয়ে মানুষের নানান কটু কথা শুনতে হয়েছে। সমাজের এসব কুসংস্কারকে জয় করে এখন বিশ্বজয়ের স্বপ্ন দেখছেন এই কলসিন্দুরের মেয়েরা।
তাদের সুবাদে সরকারি হয়েছে কলসিন্দুর উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়। এলাকায় এসেছে বিদ্যুতের আলো। তবে রাস্তাঘাটের তেমন কোনো উন্নয়ন হয়নি। তাই রাস্তাঘাট উন্নয়নের দাবি জানান সাফজয়ী ফুটবল কন্যারা। মারিয়া মান্দার বাড়িতে যেতে নেতাই নদী পেরুতে হয় নৌকা দিয়ে। তাই মারিয়া একটি ব্রিজ নির্মাণের দাবি জানান।
শামসুন্নাহার জুনিয়র, সিনিয়র এবং তহুরার বাড়িতে যেতে হয় ভাঙ্গা রাস্তা অতিক্রম করে। রাস্তা নির্মাণের দাবি জানান তারা।