স্টাফ রিপোর্টার, ময়মনসিংহ। শেখ রাসেল দিবস উপলক্ষ্যে ১৮ অক্টোবর (মঙ্গলবার) ময়মনসিংহে দিনভর নানামুখী কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। বিভাগীয় ও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নগরীর টাউনহল প্রাঙ্গন হতে বর্ণাঢ্য র্যালি বের হয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে গিয়ে শেষ হয়। র্যালিতে নেতৃত্ব দেন ময়মনসিংহের বিভাগীয় কমিশনার মোঃ শফিকুর রেজা বিশ্বাস।
র্যালি শেষে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে দিবসটির তাৎপর্য নিয়ে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভা ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় বিভাগীয় কমিশনার মোঃ শফিকুর রেজা বিশ্বাস বলেন, শেখ রাসেল ১১ বছর বয়সেই দুর্বৃত্তদের হাতে শহিদ হয়েছেন। শেখ রাসেল ছোট হলেও রাজনৈতিক পরিবারে তার জন্ম এবং একজন রাজনীতিবিদের যেসব মানবিক গুণাবলী থাকে ছোট বয়সেই তার মাঝে সেটা উন্মেষ ঘটেছিল। এত অল্প বয়সেই তার ভেতরে যে মানবতাবোধ, বিচারহীনতার যে মানসিকতা, অধিকার হতে বঞ্চিত হওয়ার যে কঠুরতা, এসব দেখে বুঝা যায়, বেঁচে থাকলে এখন পরিণত রাজনীতিবিদ হতেন।
দিবসটির গুরুত্ব তুলে ধরে বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় ময়মনসিংহ রেঞ্জ ডিআইজি দেবদাস ভট্টাচার্য্য বলেন, শেখ রাসেলের জন্মদিনে যে আনন্দ, হাসিখুশি থাকার কথা ছিল আমরা সেই আনন্দটুকু প্রকাশ করতে পারছিনা। কারণ ১৯৬৪ সাল থেকে মাত্র ১০ বছর বয়সের ব্যবধানে যে মর্মান্তিক মৃত্যু আমরা প্রত্যক্ষ করেছি, সেটি পৃথিবী আর দেখেনি। আমার কাছে মনে হয়, জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যাকান্ডের কলঙ্ক, জাতি হিসেবে আমাদের বয়ে বেড়াতে হবে। আমরা যেন কলঙ্কের বোঝা লাঘব করতে পারি।
সভাপতির বক্তৃতায় জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এনামুল হক বলেন, শেখ রাসেলের মত একজন মানবিক মানুষ যদি আজকে আমাদের মাঝে থাকতেন, তাহলে আমরা আরো কিছু তার কাছ থেকে পেতাম। সেই শেখ রাসেলের আদর্শ যেন আমাদের শিশুরা ধারণ করে, সেই প্রত্যাশা রাখি।
আলোচনা সভার মাধ্যমে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ বিশেষ প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক ৫ হাজার শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব এবং প্রতিটি সংসদীয় আসনে একটি করে মোট ৩০০ টি শেখ রাসেল স্কুল অব ফিউচার এর উদ্বোধন ও ‘দুরন্ত প্রাণবন্ত শেখ রাসেল’ বইটির মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠান বড় পর্দায় বিটিভির সৌজন্যে সরাসরি সম্প্রচার করে দেখানো হয়।
এছাড়া সকাল সাড়ে ৭ টায় শেখ রাসেলের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়, বাদ জোহর বিশেষ মোনাজাত এবং মন্দির, গীর্জা ও অন্যান্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করা হয়। বিকাল ৪ টায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও পুরস্কার বিতরণের আয়োজন করা হয়। জেলা তথ্য অফিসের উদ্যোগে নগরীর বিভিন্ন জনগুরুত্বপূর্ণ স্থানে শেখ রাসেলের জীবনীভিত্তিক ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করা হয়।
এ সকল আয়োজনে ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ ইউসুফ আলী, ময়মনসিংহ পুলিশ সুপার মাছুম আহাম্মদ ভূঞা, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) পুলক কান্তি চক্রবর্তী, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মোঃ সফিকুল ইসলাম, মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মোঃ এহতেশামুল আলম, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীসহ গণমাধ্যমকর্মীবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।