নেত্রকোনার ইটভাটাগুলোতে শুরু হয়েছে ইট তৈরির মৌসুম। ইটের মৌসুমকে ঘিরে অবৈধ পুরাতন অসংখ্য ইট ভাটা থাকলেও অবৈধ পন্থায় নতুন অবৈধ ইটভাটা স্থাপন হচ্ছে লোকালয়ে, কৃষিজমিতে, । সরকারি নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে গড়ে উঠা এসব ইটভাটার অধিকাংশই ছাড়পত্র নেই। অবাধে পোড়ানো হচ্ছে জ্বালানি কাঠ। বনাঞ্চলের কাছে ফসলি জমি কেটে জেলা প্রশাসনের অনুমোদন ছাড়া আনা হচ্ছে মাটি। তথ্য সূত্রে,এসব অবৈধ ইটভাটা বন্ধ করতে মালিক পক্ষকে বার বার নোটিশ করেছে পরিবেশ অধিদপ্তর।
সরজমিনে দেখা গেছে, এসব নোটিশ অমান্য করে বীরদর্পে চালাচ্ছেন অবৈধ ইটভাটা। প্রশাসন কঠোর হলে বছরের পর বছর কিভাবে চলে এসব অবৈধ ইটভাটা নাকি প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই চলে এসব অবৈধ ইটভাটা এমন প্রশ্ন জনমনে? তবে স্হানীয় এলাকা বাসীর ক্ষোভ দীর্ঘ দিন যাবৎ এসব অবৈধ ইটভাটা চললেও নেয়া হয়নি কোন ব্যাবস্হা!
এছাড়া আধুনিক প্রযুক্তির পরিবর্তে ব্যবহৃত হচ্ছে ৯৫ থেকে ১২০ ফুট উচ্চতার স্থায়ী ও অস্থায়ী চিমনি,অনেক চিমনি ফাটল ধরেছে,যেকোনো ভেঙ্গে পড়তে পারে চিমনি এমন আশংকা ইটভাটায় নিয়োজিত শ্রমিকদের, তারমধ্যে অন্যতম কেন্দুয়া উপজেলার আশুজিয়া ইউনিয়নের চন্দন কান্দি গ্রামে অবস্থিত এম বি বি ব্রিকস । কাঠ পোড়ানো ও স্বল্প উচ্চতার চিমনি ব্যবহার করায় ইটভাটাগুলোতে নির্গত হচ্ছে প্রচুর পরিমাণে কালো ধোঁয়া। এতে জনস্বাস্থ্যের ওপর ও ফসলি জমির উপর বিরূপ প্রভাব ফেলছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইটভাটা সৃষ্ট দূষণে বয়স্ক ও শিশুরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এছাড়া কালো ধোঁয়ার কারণে মানুষের ফুসফুসের সমস্যা, শ্বাসকষ্ট ও নানা রোগ দেখা দিতে পারে। ইটভাটাসৃষ্ট দূষণ পরিবেশ বিপর্যয়সহ কৃষি উৎপাদন ও ফলমূলের ফলন ক্ষতিগ্রস্ত এবং গাছপালার স্বাভাবিক বৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত করছে।
এদিকে এলাকাবাসী জানান, ইটভাটার আগ্রাসনে নষ্ট হচ্ছে যেমন ফসলি জমি তেমনি পরিবেশ । অপরিকল্পিত ইটভাটা জমির সর্বনাশ ডেকে আনছে। যা কৃষি নির্ভর দেশের জন্য চরম হুমকিস্বরূপ।
নেত্রকোনায় ২০১৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত বার বার অবৈধ ইটভাটা বন্ধের নোটিশ করলেও বীরদর্পে আইন অমান্য করে চালাচ্ছেন এসব ইটভাটা!এদিকে, নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার দলপা ইউনিয়নের রামপুর বাজারে অবস্থিত এপেক্স ব্রিকস সহ অসংখ্য অবৈধ ইটভাটার মালিক প্রভাব খাটিয়ে বিঘায় বিঘায় আবাদি জমি নষ্ট করে অবৈধভাবে চালাচ্ছেন ইটভাটা।
ফলে গাছে ফল ধরছে না ইটভাটার কালো ধোঁয়ায় বায়ু দুষণের প্রভাবে।
মানবাধিকারকর্মী, পরিবেশবিদরা জানান, যত্রতত্র ইটভাটা স্থাপনের ফলে একদিকে কৃষি জমির ওপর মারাত্মক প্রভাব পড়ছে। অন্যদিকে জীববৈচিত্র্য আজ হুমকির মুখে। দ্রুত অবৈধ ইটভাটাগুলো আইনের আওতায় আনা উচিত।
এ বিষয়ে নেত্রকোনা পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক পারভেজ আহম্মেদ বলেন, অবৈধ ইটভাটাগুলোর বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে মোবাইল কোর্ট অভিযান অব্যাহত রয়েছে, পজিশন গত দিক বিবেচনা করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।