1. admin@mymensingherkhobor.com : admin :
  2. amin@mymensingherkhobor.com : Amin :
  3. info@mymensingherkhobor.com : Aziz :
  4. editor@mymensingherkhobor.com : Editor :
  5. info.popularhostbd@gmail.com : PopularHostBD :
বনানী কবরস্থানে চির নিন্দ্রায় শায়িত হলেন শাজাহান সিরাজ - দৈনিক ময়মনসিংহের খবর
বুধবার, ০৯ অক্টোবর ২০২৪, ০৩:১৬ পূর্বাহ্ন

বনানী কবরস্থানে চির নিন্দ্রায় শায়িত হলেন শাজাহান সিরাজ

Reporter Name
  • প্রকাশের সময় : বৃহস্পতিবার, ১৬ জুলাই, ২০২০
  • ১০৮ বার পড়া হয়েছে

স্বাধীনতার ইশতেহার পাঠক, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, সাবেক মন্ত্রী শাজাহান সিরাজকে বুধবার রাতে বনানী কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। এ সময় মরহুমের পরিবারের সদস্য ছাড়াও বিএনপির নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে বাদ এশা গুলশান সোসাইটি মসজিদে তার তৃতীয় দফা নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এতে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, বিএনপি পররাষ্ট্র বিষয়ক উইংয়ের সদস্য প্রকৌশলী ইশরাক হোসেন, তাবিথ আউয়াল, ঢাকা বারের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট খোরশেদ আলম, বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস উইং সদস্য শায়রুল কবির খানসহ দলমত নির্বিশেষ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেন।

তবে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে জানাজায় লোক সমাগম কম হয়।

এর আগে সন্ধ্যা ৭টার দিকে টাঙ্গাইলের কালিহাতী থেকে মরহুমের মরদেহ ঢাকায় নিয়ে আসা হয়। এরপর এশার নামাজের আগে তার মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় সোসাইটি মসজিদে।

এদিকে ভালোবাসা, শ্রদ্ধা আর চোখের পানিতে শাজাহান সিরাজকে শেষ বারের মতো বিদায় জানিয়েছেন টাঙ্গাইলের কালিহাতীর মানুষ। প্রিয় নেতাকে একবার দেখার জন্যে দলমত নির্বিশেষে সর্বস্তরের মানুষের ঢল নামে।

বুধবার সকাল সাড়ে ১২ টায় অ্যাম্বুলেন্সযোগে শাজাহান সিরাজের মরদেহ ঢাকা থেকে কালিহাতী উপজেলার এলেঙ্গায় পৌঁছালে সেখানে এক হৃদয় বিদারক পরিবেশের সৃষ্টি হয়। তার দীর্ঘদিনের শত শত রাজনৈতিক সহকর্মী, ভক্ত অনুসারীরা শেষবারের মতোন তাকে একনজর দেখতে সকাল থেকেই অপেক্ষা করছিলেন।

দুপুর ১২ টার দিকে টাঙ্গাইলের এলেঙ্গা সরকারী শামসুল হক কলেজ মাঠে প্রথম জানাজা ও দুপুর ২ টা ৩০ মিনিটে কালিহাতী সদরের শাজাহান সিরাজ কলেজ মাঠে দ্বিতীয় নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।

কালিহাতী উপজেলা নির্বাহী অফিসার শামীম আরা নিপার উপস্থিতিতে গার্ড অব অনার প্রদান করা হয় এই বীর সন্তানকে।

প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা কর্মীসহ সাধারণ মানুষ জানাজায় অংশগ্রহণ করেন। করোনা ভাইরাসের কারণে সামাজিক দূরত্ব মেনে জানাজা অনুষ্ঠিত হওয়ায় মাঠে লোক সংকুলান হয় নি। পরে রাস্তায় দাঁড়িয়ে অনেক মানুষ জানাজা নামাজ পড়েন।

দুই স্থানেই প্রশাসন, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান, পেশাজীবী, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের পক্ষ ফুল দিয়ে মরদেহে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। এসময় বক্তারা মহান মুক্তিযুদ্ধে তার অবদানের কথা স্মরণ করেন। পরিবারের পক্ষ থেকে সবার উদ্দেশ্যে কথা বলেন শাজাহান সিরাজের মেয়ে ব্যারিস্টার সারওয়াত সিরাজ শুক্লা।

জানাজা নামাজে অংশগ্রহণ করেন টাঙ্গাইল-৪ কালিহাতী আসনের সংসদ সদস্য হাছান ইমাম খান সোহেল হাজারী, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আনছার আলী বিকম, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোজহারুল ইসলাম তালুকদার, কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য লুৎফর রহমান মতিন,  টাঙ্গাইল জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট ফরহাদ ইকবাল, টাঙ্গাইল জেলা কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট রফিকুল ইসলাম রফিক, উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক শুকুর মাহমুদ, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক ও কালিহাতী পৌরসভার মেয়র আলী আকবর জব্বার, এলেঙ্গা পৌরসভার মেয়র নূর এ আলম সিদ্দিকী ও উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোজাম্মেল হক হিরোসহ জেলা ও উপজেলা বিএনপি, আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।

উল্লেখ্য, শাহজাহান সিরাজ মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৩ টায় রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তিনি দীর্ঘদিন ৮ বছর ধরে ক্যানসারে ভুগছিলেন।

তার মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে দেশের রাজনৈতিক ও সামাজিক অঙ্গনে এবং মরহুমের নির্বাচনী এলাকা টাঙ্গাইলে শোকের ছায়া নেমে আসে।

মুক্তিযোদ্ধা শাজাহান সিরাজের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বুধবার তিনি শাজাহান সিরাজের স্ত্রী রাবেয়া সিরাজ ও তার মেয়ের সঙ্গে ফোনে কথা বলে তাদের সান্ত্বনা দেন এবং গভীর সমবেদনা জানান।

এদিকে ঢাকায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যাওয়ার খবর পেয়ে তার বাসায় ছুটে যান বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ। ফোন করে শাজাহান সিরাজের স্ত্রী রাবেয়া সিরাজকে সান্ত্বনা দেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। মির্জা ফখরুল মরহুমের বাসভবনে গিয়ে পরিবারের সদস্যদের সমবেদনা জানান।

বর্ণাঢ্য রাজনীতিবিদ শাজাহান সিরাজ ১৯৪৩ সালের ১ মার্চ জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম আব্দুল গণি মিয়া এবং মাতার নাম রাহিমা খাতুন। বাড়ি টাঙ্গাইলের কালিহাতী পৌরসভার বেতডোবাতে। শাজাহান সিরাজ স্বাধীনতা পূর্ববর্তী রাজনীতির ‘চার খলিফা’র একজন। বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা তৈরির পরিকল্পনাকারীদের মধ্যে তিনি অন্যতম। ৩ মার্চ ১৯৭১ সালে মহান স্বাধীনতার ইশতেহার পাঠ করেন তৎকালীন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শাজাহান সিরাজ।

শাজাহান সিরাজ একজন তুখোড় ছাত্রনেতা হিসেবে ষাটের দশকে বঙ্গের আলীগড় খ্যাত টাঙ্গাইলের করটিয়ার সরকারি সা’দত কলেজের ছাত্রসংসদের ২ বার ভিপি নির্বাচিত হন। পরবর্তীতে দক্ষ ও জনপ্রিয় রাজনীতিবিদ শাজাহান সিরাজ জাসদ ও বিএনপির প্রার্থী হয়ে ১৯৭৯, ১৯৮৮, ১৯৯১, ১৯৯৬ ও ২০০১ সালে ৫ বার টাংগাইল- ৪ (কালিহাতী) আসন থেকে জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি বিএনপি সরকারের নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী, বন ও পরিবেশ, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বপালন করেছেন।

স্বাধীনতার পর শাজাহান সিরাজ জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদের রাজনীতির সাথে যুক্ত হন। পরবর্তীতে তিনি জাসদ থেকে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপিতে যোগদান করে ভাইস চেয়ারম্যান হন।

শিক্ষানুরাগী হিসেবে তিনি কালিহাতী উপজেলা সদরে কালিহাতী শাজাহান সিরাজ কলেজসহ একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন। মৃত্যুকালে স্ত্রী রাবেয়া সিরাজ, এক ছেলে রাজিব সিরাজ শুভ এবং এক মেয়ে ব্যারিস্টার সারওয়াত সিরাজ শুক্লাসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।

সংবাদ টি শেয়ার করুন

এ বিভাগের আরো সংবাদ
© All rights reserved
Design BY POPULAR HOST BD