লকডাউনের ফলে গণপরিবহন বন্ধ থাকায় দীর্ঘদিন ধরে সবজির ন্যায্য দাম না পাওয়ায় লোকসান গুনছিলেন নরসিংদী জেলার কৃষকরা। এতে অনেক কৃষক সবজির বাগান পরিচর্যা বন্ধ করে দেয়া, এমন কী কেউ কেউ বাগান কেটে ফেলেন। লকডাউন তুলে নেয়ার পর থেকে নরসিংদীর পাইকারী বাজারগুলোতে বেড়েছে বিভিন্ন ধরনের সবজির দাম। এতে সবজির ন্যায্য দাম পেয়ে হাসি ফুটেছে কৃষকদের মুখে।
কৃষকরা জানান, করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে নরসিংদীর পাইকারী সবজির বাজার বেলাবো উপজেলার বারৈচা, নারায়ণপুর, রায়পুরার জঙ্গী শিবপুর, শিবপুর উপজেলা সদর, সিএন্ডবি বাজার, পালপাড়া বাজারে ক্রেতা না থাকায় বিপাকে পড়েন কৃষকরা। ক্রেতার অভাবে ব্যাপক দরপতন ঘটে সবধরনের শাক-সবজির। গণপরিবহন সংকটের কারণে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ক্রেতারা সবজির বাজারে না আসায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়। করোনার এই পরিস্থিতিতে বাজারে সবজি বিক্রি করতে গিয়ে রিকশাভ্যানের ভাড়াও উঠাতে পারছিলেন না কৃষকরা। সবজির উৎপাদন খরচ না পেয়ে মানবেতর জীবনযাপন করতে হয়েছে কৃষকদের।
গত ৩১ মে থেকে লকডাউন তুলে নেয়ার পর নরসিংদীর পাইকারী বাজারগুলোতে বেড়েছে বিভিন্ন ধরনের শাক-সবজির দাম। সবধরনের সবজির ন্যায্য দাম পেয়ে হাসি ফুটেছে কৃষকদের মুখে। এতে নতুন করে ফসলী জমির পরিচর্যা বাড়িয়েছেন কৃষকরা।
শুক্রবার (০৫ জুন) জেলার অন্যতম পাইকারী সবজির হাট জেলার বেলাব উপজেলার বারৈচা বাজারে গিয়ে দেখা যায় বিভিন্ন ধরনের সবজি নিয়ে বাজারে আসার আগেই কৃষকদের ঘিরে ধরছেন পাইকারী ক্রেতারা। দরদামে মিললে বিক্রি হয়ে যাচ্ছে বাজারে প্রবেশের আগে সড়কেই। দেশব্যাপী খুচরা বাজারে সবজির চাহিদা বাড়ায় ক্রেতারাও সবধরনের সবজি কিনছেন। ৩১ মে লকডাউন তুলে নেয়ার ঘোষণা আসার পর থেকে প্রতিদিনই সবধরনের সবজির দাম বাড়ায় খুশি কৃষকরা। তবে সবজির বাজারগুলোতে সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে না চলায় করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি বেড়ে গেছে।
পাইকারী ক্রেতা ও কৃষকরা জানান, শুক্রবার ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের বারৈচা বাজারে কাকরুল প্রতি কেজি ৩০ থেকে ৩৫ টাকা, করলা প্রতি কেজি ৩০ থেকে ৩৫ টাকা, চাল কুমড়া প্রতি পিস ১৫ থেকে ২০ টাকা, চিচিংগা প্রতি কেজি ২০ টাকা, ঢেড়শ প্রতি কেজি ২০টাকা, বরবটি কেজি ২৫ টাকা, বেগুন ১০ থেকে ১৫ টাকা কেজি, লেবু প্রতি হালি ১০ থেকে ১৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এছাড়া অন্যান্য ধরনের শাক-সবজিরও ন্যায্য দাম পাওয়া যাচ্ছে।
শাক-সবজির এমন দাম অব্যাহত থাকলে কৃষকদের লোকসান কাটিয়ে উঠা সম্ভব হবে বলে মনে করছেন কৃষি কর্মকর্তারা।