সরকারি লোকসানি প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা বেড়েছে। একই সাথে বেড়েছে ভর্তুকির পরিমাণও। চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের মার্চ শেষে সরকারি ১২ সংস্থার লোকসান দাঁড়িয়েছে প্রায় সাড়ে ১৯ হাজার কোটি টাকা। পাশাপাশি লোকসানি সংস্থাও এক বছরে ৮টি থেকে বেড়ে ১২টি হয়েছে। গত অর্থবছরের একই সময় পর্যন্ত আট সংস্থার লোকসান ছিল ১৩ হাজার ৭৪১ কোটি টাকা। চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের ২১ এপ্রিল পর্যন্ত সরকারি ১৭টি সংস্থাকে মোট এক হাজার ৫০৭ কোটি টাকার অনুদান বা ভর্তুকি দেয়া হয়। গত ২০২২-২৩ অর্থবছরের পুরো সময়ে (সাময়িক হিসাব) যা ছিল এক হাজার ৪৭৪ কোটি টাকা। অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ প্রকাশিত বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সমীক্ষা-২০২৪ থেকে এ তথ্য জানা যায়। অর্থনৈতিক সমীক্ষার তথ্যানুযায়ী চলতি অর্থবছরের ২১ এপ্রিল পর্যন্ত রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষকে (বিআইডব্লিউটিএ) সর্বোচ্চ ৫২৭ কোটি ৮০ টাকার অনুদান দেয়া হয়। এর আগের পুরো অর্থবছরে যা ছিল ৫২৯ কোটি ৭৪ টাকা। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সরকারি অনুদান পাওয়া প্রতিষ্ঠান হচ্ছে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি)। সংস্থাটিকে চলতি অর্থবছরে দেয়া হয়েছে ৪৮২ কোটি ১৭ লাখ টাকা, আগের অর্থবছরে যা ছিল ৪৬০ কোটি ৪৩ লাখ টাকা। বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশনকে (বিএসসিআইসি) অনুদান দেয়া হয়েছে ১৯১ কোটি টাকা। গত অর্থবছরে যা ছিল ১৮৯ কোটি টাকা। এদিকে চলতি অর্থবছরের ২১ এপ্রিল পর্যন্ত পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষকে দেয়া হয় ১০১ কোটি ৪২ লাখ টাকা। বাংলাদেশ শিল্প কারিগরি সহায়তা কেন্দ্রকে (বিটাক) ৫২ কোটি ৪০ লাখ, পল্লী উন্নয়ন একাডেমিকে (আরডিএ) সাড়ে তিন কোটি, বিএসবিকে ২৬ কোটি ১৮ লাখ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোকে (ইপিবি) ১২ কোটি ৯১ লাখ, জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষকে (এনএইচএ) ১৮ কোটি ২০ লাখ, বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষকে (বেজা) ৪১ কোটি ৩২ লাখ, খুলনা ওয়াসাকে ১১ কোটি ৪৩ লাখ, রাজশাহী ওয়াসাকে ২২ কোটি ৬৪ লাখ, বিএসএমআরএনকে ৮ কোটি ৯৭ লাখ, সিবিডিএকে ৭ কোটি ১৮ লাখ এবং বিআইডব্লিউটিসিকে ৫০ লাখ টাকা দেয়া হয়েছে। সমীক্ষার তথ্যানুযায়ী, চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের এপ্রিল পর্যন্ত সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো রাষ্ট্রীয় কোষাগারে লভ্যাংশ জমা দিয়েছে ১ হাজার ৩৭ কোটি টাকা। এর আগে তারা ২০২২-২৩ অর্থবছরের সাময়িক হিসাবে ১ হাজার ৯৩৪ কোটি, ২০২১-২২ অর্থবছরে ৮৮০ কোটি এবং ২০২০-২১ অর্থবছরে ১ হাজার ২৭৯ কোটি টাকার লভ্যাংশ জমা দিয়েছিল। অন্যদিকে লক্ষ্যভিত্তিক কম আয়ের জনগণকে আরো বেশি সহায়তা দিতে ভর্তুকির অর্থ কমিয়ে তা সামাজিক সুরক্ষায় বাড়ানোর শর্ত দিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। এ অবস্থায় সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে অনুদান বা ভর্তুকি বাড়ানো অনেকে যৌক্তিক মনে করছেন না।