এই রোদ… এই ছায়া, সঙ্গে বৃষ্টির ঘ্রাণ নিয়ে ভীষণ হওয়া। এখানে সেখানে শেষ রাতের হালকার বৃষ্টির ছাপ। আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলার ভূ-প্রকৃতিতে এ দৃশ্যে এলো আষাঢ়। শুভ হোক বর্ষাযাপন!
এবার চৈত্র মাস থেকেই সারাদেশে বৃষ্টির ঘনঘটা।
বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠেও তার প্রকোপ ছিল। এসেছিল আম্পানের মতো প্রচুর মেঘবাহী ঘূর্ণিঝড়। আর আনুষ্ঠানিক বাদলদিনের সূচনা হলো ১৫ জুন অর্থাৎ আজ পয়লা আষাঢ়। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভাষায়— আবার এসেছে আষাঢ় আকাশও ছেয়ে… আসে বৃষ্টিরও সুবাস ও বাতাসও বেয়ে।
আষাঢ়ের আগমনে বাঙালির মন কতটা সজীব হয়ে উঠে কাজী নজরুল ইসলামে এই লাইনগুলো থেকে বোঝা যায়— রিমঝিম রিমঝিম ঘন দেয়া বরষে কাজরি নাচিয়া চল, পুর-নারী হরষে কদম তমাল ডালে দোলনা দোলে, কুহু পাপিয়া ময়ূর বোলে, মনের বনের মুকুল খোলে নট-শ্যাম সুন্দর মেঘ পরশে।
বাংলা ঋতুচক্রের দ্বিতীয় ঋতু বর্ষা। আষাঢ় ও শ্রাবণ এই দুই মাস মিলে তার আবাহন। রবীন্দ্রনাথের গান থেকে এই ঋতুর স্মারক হয়ে আছে কদম ফুল। অর্থাৎ, প্রিয় মানুষকে তীব্র ঝাঁঝের কদম তুলে দেওয়ার এই সময়।
বরাবরই আষাঢ়ের প্রথম দিনটি নানান আয়োজনে উদযাপিত হয়। কিন্তু করোনার প্রভাবে এবার অন্য সব আয়োজনের মতোই বর্ষাবরণে ভাটা পড়েছে। বর্ষা নিজের মতো আসবে-যাবে!
আবহাওয়াবিদরা বলে থাকেন, এ সময় জলীয় বাষ্পবাহী দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমী বায়ু সক্রিয় হয়ে ওঠে। ফলে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়। বছরের সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি রেকর্ড করা হয় বর্ষায়। বাংলার প্রকৃতি ও কৃষিতে এর দান অপূর্ব। বাঙালির মনন গঠনেও এর অনিবার্য ছাপ রয়েছে। বর্ষা নিয়ে রোমান্টিকতা নেই এমন বাঙালিও কম।
এবারের আষাঢ়ের সূচনাতে আবহাওয়ার পূর্বাভাস এ রকম- মৌসুমী বায়ু বাংলাদেশের ওপর সক্রিয়। রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং ময়মনসিংহ বিভাগের কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি ও বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি থেকে ভারি ও অতি ভারি বর্ষণ হতে পারে। রাজধানীতে জ্যৈষ্ঠের শেষদিনে বাতাসের আপেক্ষিক আর্দ্রতা ছিল ৯৭ শতাংশ।